শিক্ষনীয় গল্প

এক.

চীনের একটা বিখ্যাত গল্প আছে। গল্পটির নাম (ইংরেজি অনুবাদ) Empty Your Cup. এই গল্পে একজন ছাত্র তার শিক্ষকের কাছে নতুন কিছু শিখতে যায়। কিন্তু, শিক্ষক যখনই তাকে নতুন কিছু শেখাতে যান, সে তার পূর্ব অভিজ্ঞতা, জ্ঞান দিয়ে শিক্ষকের ভুল ধরিয়ে দেয়।
এরকম করতে করতে দেখা গেলো, শিক্ষক তাকে কিছুই শেখাতেই পারছেন না। সে তার পূর্ব মতের উপরই অটল আছে। শিক্ষক এবার একটা উদাহরণ দিয়ে তাকে বুঝাতে চাইলেন। বললেন, “দুটো চায়ের কাপ নিয়ে আসো।” চা-ভর্তি দুটো কাপ আনা হলো। শিক্ষক বললেন, “এবার তুমি ঐ কাপ থেকে এই কাপে চা ঢালো।”

ছাত্র একটু অবাক হলো। দুটো কাপই চা-ভর্তি। এক কাপের চা অন্য কাপে ঢালতে গেলে তো সেটা পড়ে যাবে। সে শিক্ষককে বললো, “চা তো পড়ে যাবে, জায়গা হবে না।” অতঃপর শিক্ষক বললেন, “তোমাকে নতুন কিছু শিখতে হলে আপাতত পূর্বের অভিজ্ঞতা, পূর্বের দর্শন মাথা থেকে ঝেড়ে নিতে হবে। নতুবা নতুন কিছু শেখাতে গেলে তুমি পূর্বের অভিজ্ঞতার ফলে তুমি আর শিখতে পারবে না। কারণ, তুমি ধরে নিয়েছো, তুমি যা জানতে সেটাই ‘সঠিক’। নতুন করে কোনো সত্য আসলে সেটা তুমি আর গ্রহণ করতে পারবে না।”

.
মানুষ যতো পড়ে, ততো নতুন নতুন জিনিস জানতে পারে। মানুষের ভুল ভাঙ্গতে থাকে। আমরা ছোটোবেলায় অনেককিছু জানতাম, কিন্তু বড় হয়ে বুঝলাম, ছোটোবেলায় যা জানতাম সেটা ভুল ছিলো। কিন্তু, বড় হবার পর যদি মনে করতাম, না, আমি আগে যা জানতাম, ঐটাই আঁকড়ে ধরে থাকবো, নতুন কিছু গ্রহণ করবো না, তাহলে তো আমাদের আর সত্য জানাটা হবে না। ছোটোবেলার জ্ঞান, অভিজ্ঞতা দিয়েই বাকি জীবন কাটাতে হবে।

দুই.

মানুষের কাছে যখন নতুন একটা তথ্য আসে, যেই তথ্যটি তার পূর্বের জ্ঞান-অভিজ্ঞতার বিপরীত, তখন বেশিরভাগ মানুষ দুই ধরণের প্রতিক্রিয়া দেখায়। সাধারণ মানুষ সেই তথ্যটি পাবার সাথে সাথেই প্রত্যাখ্যান করে, এটা কারো ‘চক্রান্ত’ বলে ধরে নেয়। যারা অনুসন্ধানী, তারা তাদের অনুসন্ধানী মন নিয়ে তথ্যটির সত্য-মিথ্যা যাচাই করে, যদি দেখা যায় নতুন তথ্যটি সঠিক, তাদের পূর্বের জ্ঞান-অভিজ্ঞতা ভুল, তাহলে তারা নতুনকে বরণ করে।
নতুনকে প্রত্যাখ্যান করাতে গিয়ে মানুষ কিছু যুক্তি দেখায়। যুক্তিগুলো অনেকটা এমনঃ
এমন তথ্য তো জীবনেও শুনি নাই!
এটা যদি সত্য হয়, আমার বাপ-দাদা কি ভুল ছিলেন?
মুসলিম হলে বলবে, এটা ইহুদি-খ্রিস্টানের চক্রান্ত!

আবেগ দিয়ে যখন আমরা নতুনকে যাচাই করবো, আর নতুন যদি সত্যও হয় তাকে গ্রহণ করতে পারবো না। পুরাতনকেই আঁকড়ে ধরতে হবে।
নূহ (আলাইহিস সালাম) যখন তাঁর সম্প্রদায়ের নেতৃস্থানীয়দের মধ্যে দাওয়াত দিলেন, তারা তাঁর দাওয়াতকে এই বলে প্রত্যাখ্যান করেছিলো, “এরূপ কথাতো আমরা আমাদের বাপ-দাদাদের মধ্যে শুনিনি।” [সূরা আল-মু’মিনুনঃ ২৩:২৪]
মূসা (আলাইহিস সালাম) যখন দাওয়াত দেন, তখন কাফেররা তাঁর দাওয়াতকে প্রত্যাখ্যান করেছিলো এই বলে, “এ তো মিথ্যা জাদু ছাড়া আর কিছুই নয়, এরূপ কথা আমাদের বাপ-দাদাদের মধ্যেও শুনিনি।” [সূরা আল-কাসাসঃ ২৮:৩৬]
যুগে যুগে রাসূলগণের দাওয়াত যারা অস্বীকার করেছিলো, তাদের একটা অজুহাত ছিলো –‘এসব কথা আমাদের বাপ-দাদারা বলে যাননি’। বাপ-দাদাদের দোহাই দিয়ে কাফিররা নবীদের দাওয়াত তথা সত্যকে অস্বীকার করেছিলো।
রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সীরাতেও আমরা দেখতে পাই, শুধুমাত্র বাবা আব্দুল মুত্তালিবের লিগ্যাসি আঁকড়ে ধরার জন্য রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) চাচা আবু তালিব ইসলাম গ্রহণ করেননি। আবু তালিব মৃত্যুর আগে বলেছিলেন, তিনি তার পূর্বপুরুষদের ধর্মমতে অবিচল থাকবেন, আর তার শেষ কথা ছিলো, তিনি আব্দুল মুত্তালিবের ধর্মমতে আছেন। [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়াঃ ৩/২৩৬]

আমরাও যদি নতুন কোনো সত্যকে এই বলে অস্বীকার করি- ‘এটা আমাদের বাপ-দাদা করেননি’ তাহলে তো ঘুরেফিরে আমরাও তো কাফিরদের সেই যুক্তিতে অটল থাকলাম।


তিন.

সত্য যে কারো কাছ থেকে আসতে পারে। সত্য যদি আমার অপছন্দের মানুষের কাছ থেকে আসে, আর এই অজুহাতে যদি আমি সত্যকেই অস্বীকার করি, তাহলে তো আমি সত্যান্বেষী হতে পারলাম না। সত্য গ্রহণে আমি আমার ‘ইগো’র কাছে হার মানলাম। সহীহ বুখারীতে উল্লেখিত আবু হুরায়রা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আর ছদ্মবেশীর গল্পটি তো আমরা পড়েছি/শুনেছি। এখানে আরেকবার গল্পটি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি। আবু হুরায়রাকে (রাঃ) রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যাকাতের মালামাল পাহারার দায়িত্ব দেন। রাতে এক আগন্তুক এসে সেখান থেকে খাদ্যসামগ্রী নিতে লাগলে আবু হুরায়রা (রাঃ) তাকে পাকড়াও করেন। আগন্তুক তার অভাবগ্রস্থ পরিবারের অজুহাত দেখালে আবু হুরায়রা (রাঃ) তাকে ছেড়ে দিন। পরেরদিন রাসূলুল্লাহর (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কাছে পুরো ঘটনা বলা হলে তিনি বললেন, “সাবধান! সে তোমার কাছে মিথ্যা কথা বলেছে এবং সে আবার আসবে।” এবার আবু হুরায়রা (রাঃ) একটু সাবধান হলেন। পরের রাতে আগন্তুক আবার আসলো। আবারো আগের মতো অজুহাত দেখালো। আবু হুরায়রার (রাঃ) আবারো দয়া হলো। তিনি তাকে ছেড়ে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবারো আবু হুরায়রাকে (রাঃ) সাবধান করে দিলেন।আগন্তুক তৃতীয়বারের মতো আসলো। এবার আবু হুরায়রা (রাঃ) বললেন, “আজ তোমাকে ছাড় দেবো না।” আগন্তুক এবার ছাড় পাবার জন্য বললো, “আমাকে ছেড়ে দিলে আমি তোমাকে এমন কিছু শেখাবো, যাতে তুমি উপকৃত হবে।” আবু হুরায়রার (রাঃ) কৌতুহল জাগলো। তিনি বললেন, “বলো।” আগন্তুকটি আবু হুরায়রাকে (রাঃ) ‘আয়াতুল কুরসী’র ফজিলত বর্ণনা করে চলে যায়। পরদিন আবু হুরায়রা (রাঃ) রাসূলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পুরো ঘটনা বললে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাঁকে বললেন, “যদিও সে মিথ্যুক, তবে এই কথাটি সে সত্য বলেছে।”
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আবু হুরায়রাকে (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, “তুমি কি জানো, সে কে ছিলো?” আবু হুরায়রা (রাঃ) ‘না’ বললে রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “সে ছিলো শয়তান।” [সহীহ বুখারীঃ ২৩১১]

দেখুন, শয়তান হলো সবচেয়ে বড় মিথ্যাবাদী। তার কাজই হলো মিথ্যা বলে মানুষকে ধোঁকা দেওয়া। সেই মিথ্যাবাদী শয়তানও যখন একটা সত্য কথা বললো, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার সত্য কথাটি উড়িয়ে দিলেন না। তিনি শয়তানের সত্য কথাটির স্বীকৃতি দিলেন, পাশাপাশি সতর্ক করে দিলেন, “সাবধান! সে কিন্তু মিথ্যাবাদী।”

শয়তানের মতো মিথ্যাবাদী যখন সত্য কথা বললো, সে ‘শয়তান’ এই বলে তার সত্য কথাটি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অস্বীকার করেননি। তাহলে আমার-আপনার অপছন্দের মানুষটি কি শয়তানের চেয়েও নিকৃষ্ট? তার কাছ থেকে কি সত্য আসতে পারে না? যদি মনে করেন, সত্য কেবল আমার পছন্দের মানুষরাই জানে, তারা সত্য বলে, আর আমার অপছন্দের মানুষরা সত্য জানে না, তাহলে আপনি সত্যান্বেষী হলেন না, আপনি ব্যক্তিপূজারী, দলপূজারী হলেন।


চার.

মনে করুন, আপনি কার নিয়ে একটা অপরিচিত জায়গায় রওয়ানা দিলেন। দুই ঘন্টা ড্রাইভ করার পর একজন পথচারীকে জিজ্ঞেস করলেন, “ভাই, দিল্লীর পথটা কোন দিকে?” পথচারী বললো, “আরে ভাই, দিল্লি তো এইদিকে না। আপনি ভুল পথে আসছেন। দিল্লীর পথটা তো উল্টোদিকে। যেদিকে যাচ্ছেন, এইদিকে গেলে আপনার আর দিল্লী যাওয়া হবে না।”
এখন যদি আপনি জেদ ধরেন- ধুর! এতোক্ষণ ধরে ড্রাইভ করলাম, এখন আবার ব্যাক করবো? যাই যতোদূর যাওয়া যায়। তাহলে তো আপনার আর দিল্লি যাওয়া হবে না। ভুল পথেই যেতে থাকবে। দিল্লি বহুদূর!
ভুলটা জানার পর বুদ্ধিমানের কাজ হলো, গাড়ি ঘুরিয়ে দিল্লির রাস্তা ধরা। ভুল রাস্তায় যতোক্ষণ গাড়ি চালাবেন, দিল্লি পৌঁছাতে সময় ততো বেশি লাগবে।
এই দৃশ্যপট নিয়ে যাকিয়া আল-উতাইবি একটা কবিতা লিখেন। কবিতাটির নজীবানুবাদ হলোঃ
“ভুল কোনো ট্রেনে যদি উঠেই পড়ো
পরের স্টেশনেই নেমে যেয়ো।
ট্রেন যত দূরে যাবে
তোমার ফেরার কষ্ট তত বেশি হবে।”

পাঁচ.
সত্যকে গ্রহণ না করার পেছনে মানুষ যতোগুলো অজুহাত দেখায়, তার মূলে রয়েছে অহংকার। সেই অহংকার হতে পারে তার জ্ঞানের অহংকার, অভিজ্ঞতার অহংকার অথবা বাপ-দাদার লিগ্যাসী আঁকড়ে ধরে থাকার অহংকার। এই অহংকার মানুষকে সত্য বিমুখ করে রাখে, তার পতন ডেকে আনে।
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সাহাবীদেরকে বলেন, “যার অন্তরে অণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।” একজন জিজ্ঞেস করলেন, সুন্দর পোষাক পরা অহংকার কি-না। রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, “প্রকৃতপক্ষে অহংকার হচ্ছে দম্ভভরে সত্য ও ন্যায় অস্বীকার করা এবং মানুষকে ঘৃণা করা।” [সহীহ মুসলিমঃ ১৬৬]
অর্থাৎ, সুন্দর পোষাক পরা অহংকার না; বরং সত্যকে অস্বীকার করাই হলো অহংকার।
আমরা ছোটোবেলা থেকে অনেক কিছু জেনে এসেছি, অনেক আমল করে এসেছি। বড় হয়ে যদি জানতে পারি- আমাদের আমলগুলোর মধ্যে শির্ক আছে, বিদ’আত আছে, সুন্নাতের খেলাফ আছে, তাহলে আমরা কী করবো?
দম্ভভরে বলবো- আমাদের বাপ-দাদা কি ভুল ছিলেন? আমরা কি কম জানি?
নাকি আমরা ভালো করে যাচাই-বাছাই করে দেখবো নতুন তথ্যটি সঠিক কি-না?

কবি বলেছেনঃ
“মনরে আজ কহ যে
ভালো মন্দ যাহাই আসুক
সত্যরে লও সহজে।”


NongorProbondho

কবিতা

মনে থাকবে?
_আরণ্যক বসু

পরের জন্মে বয়স যখন ষোলোই সঠিক
আমরা তখন প্রেমে পড়বো
মনে থাকবে?
বুকের মধ্যে মস্তো বড় ছাদ থাকবে
শীতলপাটি বিছিয়ে দেব;
সন্ধে হলে বসবো দু’জন।
একটা দুটো খসবে তারা
হঠাৎ তোমার চোখের পাতায় তারার
চোখের জল গড়াবে,
কান্ত কবির গান গাইবে
তখন আমি চুপটি ক’রে দুচোখ
ভ’রে থাকবো চেয়ে
মনে থাকবে?
এই জন্মের দূরত্বটা পরের
জন্মে চুকিয়ে দেব
এই জন্মের চুলের গন্ধ পরের
জন্মে থাকে যেন
এই জন্মের মাতাল চাওয়া পরের
জন্মে থাকে যেন
মনে থাকবে?
আমি হবো উড়নচন্ডি
এবং খানিক উস্কোখুস্কো
এই জন্মের পারিপাট্য সবার
আগে ঘুচিয়ে দেব
তুমি কাঁদলে গভীর সুখে
এক নিমেষে সবটুকু জল শুষে নেব
মনে থাকবে?
পরের জন্মে কবি হবো
তোমায় নিয়ে হাজারখানেক গান
বাঁধবো।
তোমার অমন ওষ্ঠ নিয়ে
নাকছাবি আর নূপুর নিয়ে
গান বানিয়ে
মেলায় মেলায় বাউল
হয়ে ঘুরে বেড়াবো
মনে থাকবে?
আর যা কিছু হই বা না হই
পরের জন্মে তিতাস হবো
দোল মঞ্চের আবীর হবো
শিউলিতলার দুর্বো হবো
শরৎকালের আকাশ দেখার
অনন্তনীল সকাল হবো;
এসব কিছু হই বা না হই
তোমার প্রথম পুরুষ হবো
মনে থাকবে?
পরের জন্মে তুমিও হবে
নীল পাহাড়ের পাগলা-ঝোরা
গাঁয়ের পোষাক ছুড়ে ফেলে
তৃপ্ত আমার অবগাহন।
সারা শরীর ভ’রে তোমার হীরকচূর্ণ
ভালোবাসা।
তোমার জলধারা আমার
অহংকারকে ছিনিয়ে নিল।
আমার অনেক কথা ছিল
এ জন্মে তা যায়না বলা
বুকে অনেক শব্দ ছিল
সাজিয়ে গুছিয়ে তবুও ঠিক
কাব্য করে বলা গেল না!
এ জন্ম তো কেটেই গেল অসম্ভবের
অসঙ্গতে
পরের জন্মে মানুষ হবো
তোমার ভালোবাসা পেলে
মানুষ হবোই মিলিয়ে নিও!
পরের জন্মে তোমায় নিয়ে
বলতে ভীষণ লজ্জা করছে
ভীষণ ভীষণ লজ্জা করছে
পরের জন্মে তোমায় নিয়ে
মনে থাকবে?

প্রিয় কবিতা

ফুলের কৃষ্ণপক্ষ
__ রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ

আমি যার হাতে ফুল তুলে দেই
সে-ই প্রথম ভুল বোঝে আমাকে ।

আমি যাকে বিশ্বাসযোগ্য ভেবে
মনে মনে এক নির্জন স্বপ্নকে স্বাস্থ্যবান কোরে তুলি ,
আমার বিশ্বাস নিয়ে সুবর্ণ চোর
শুধু সেই পালিয়ে যায় ।

আমি যাকে ফুল দিই সে-ই ভুল বোঝে ,
চিরদিন এরকম বিপরীত হয় ।

আমি যার শিয়রে রোদ্দুর এনে দেব বোলে
কথা দিয়েছিলাম
সে আঁধার ভালবেসে রাত্রি হয়েছে ।
এখন তার কৃষ্ণপক্ষে ইচ্ছের মেঘ
জোনাকির আলোতে স্নান করে ,
অথচ আমি তাকে তাজা রোদ্দুর দিতে চেয়েছিলাম ।

বয়সে মাথা রেখে জেগে আছে একজন
তাকে ত দি ই নি কিছুই –
অথবা যে ফুলের মৌলিক অর্থ কখনো শেখেনি
ভালবেসে রাত্রি জাগরণ ,
চোখের নিচে অনিদ্রার শোকচিহ্ন রাখেনি সাজিয়ে

আমি যার হাতে ফুল তুলে দিই
সে-ই প্রথম ভুল বোঝে আমাকে ।
আমি ভুল বুঝলে কে আমার হাতে তুলে দেবে ফুলের স্বপ্ন ?

কেউ কেউ

আমাকে ভুলে যেও রোজ,
ভুলে যেও কতটা নিখোঁজ।
জেনে রেখ-
কেউ কেউ থেকেও থাকে না
পদভারে এতটুকু চিহ্ন আঁকে না।
কেউ কেউ না থেকেও থাকে
চুপিচুপি রোজ ছুঁয়ে যায়,
স্মৃতির গভীর জল নদীটির বাঁকে।

কেউ কেউ
_ সাহাদাত হোসাইন

অনেকদিন দেখা হবে না
তারপর একদিন
দেখা হবে।
দুজনেই দুজনকে বলবো,
‘অনেকদিন দেখা হয় নি’।
এইভাবে যাবে দিনের
পর দিন
বত্সরের পর বত্সর।
তারপর একদিন হয়ত
জানা যাবে বা হয়ত
জানা যাবে না,
যে তোমার সঙ্গে আমার
অথবা আমার সঙ্গে তোমার
আর দেখা হবে না।

__তারাপদ রায়

বেঁচে আছি এই তো আনন্দ, এই আনন্দের জন্য আমি
সবকিছু মাথা পেতে নেবো,
যে কোনো দুঃখ, যে কোনো শাস্তি-
শুধু এই ভোরের একটু আলো দ্যাখার জন্য
আমি পথের ভিক্ষুক হতে রাজি
এই যে গোলাপ ফুলটির দিকে যতোক্ষণ খুশি
তাকিয়ে থাকতে পারি
এই সুখে আমি হাসিমুখে সব দুঃখ-
মাথা পেতে নেবো।

বেঁচে আছি এই তো আনন্দ, এই আনন্দের কাছে
কোনো দুঃখই কিছু নয়
এই নির্বাসন, এই শাস্তি, এই দ্বীপান্তর;
এই মেঘ, এই ঝুম বৃষ্টি, এই শিশিরের শব্দের জন্য
আমি সহস্র বছরের কারাদন্ড- মাথায় নিয়েও বেঁচে
থাকতে চাই,

বেঁচে আছি এই তো আনন্দ, এই আনন্দে সব
আঘাত আমি মাথা পেতে নেবো।

_ মহাদেব সাহা

“প্রিয়জন চলে গেলে মানুষই ব্যথিত হয়,
আকাশ নির্বিকার, আকাশ কখনও নয়।
তোমরা মানুষ, তাই সহজেই দুঃখ পাও,
হে ঈশ্বর,
আমাকে আকাশ করে দাও।”

_নির্মলেন্দু গুণ।

এইমাত্র নিজের মৃতদেহ সৎকার করে এসেছি
ভালবাসা তোমার অবিশ্বাসি হাতে ছুঁয়ো না আমাকে

__রুদ্র গোস্বামী

মিজানুর রহমান আজহারী বলেছেন কী? আর মাজার-পূজারীরা বুঝেছে কী?

মুহতারাম #মিজানুররহমানআজহারী বলেছেন কি আর মাজার পূজারীরা বুঝেছে কি⁉️

আজহারী বলেছেন: ইসলাম হলো চারা বীজের মতো, বাতিলরা চায় ইসলামকে পুতে ফেলতে, কিন্তুু তা আরো গর্জে উঠে।

মাজারী বলেছে: আযহারী

ইসলামকে সামান্য চারাবীজের সাথে তুলনা করেছে, (নাউজুবিল্লাহ) 😄

★আজহারী বলেছেন : ওহী আসার পুর্বে রাসুল (সঃ) লিখতে জানতেন না, অক্ষর জ্ঞান ছিলনা, যাকে বলে নিরক্ষর।

★মাজারী বলেছে : নিরক্ষর মানেতো মুর্খ, রাসুলকে মুর্খ বললো,( নাউজুবিল্লাহ)😄

★আজহারী বলেছেন : পুরান ঢাকাতে “আবে হালাকে” গালি মনে করতেন না, তারা বন্ধু, বাবা, এমনকি আল্লাহ-রাসুলকেও আবে হালা বলতো,যা তাদের অভ্যাস।

★মাজারী বলেছে : আযহারী আল্লাহ রাসুলকে হালা বলেছে (নাউজুবিল্লাহ)😄

★আজহারী বলেছেনঃ মদ যখন হারাম ছিলনা তখন হযরত আলী (রঃ) মদ খেয়ে নামাজের ইমামতি করার সময় মাতলামি করছে। এমনকি জান্নাতে মদের ঝর্ণা থাকবে সকল জান্নাতিরা তা পান করবে। কিন্তুু ও মদে কোন নেশা থাকবে না,

★মাজারী বলেছে: আলী (রা) নাকি মদ খেয়েছেন, (নাউজুবিল্লাহ)😄

★আজহারী বলেছেন: রাসুল (সঃ) সুন্দর, সুঠাম দেহের অধিকারি ছিলেন। পেট বুকের উপরে ছিল না, পেটে ভাজ ছিল, যাকে আধুনিক ভাষা বলে “সিক্স প্যাক”।

★মাজার পুজারী বলেছে : রাসুলকে সিক্স প্যাক বলেছে ( নাউজুবিল্লাহ)😄

আজহারী বলেছেনঃ খাদিজা(রাঃ) ২ বার তালাক প্রাপ্তা মানে কুমারী নয় ভার্জিন নয়, তার পরেও রাসুল(সঃ)উনাকে বিয়ে করে বুঝালেন যে রাসুল(সঃ)নারীর যৌবন লোভী নয়।

মাজারী বলেছেঃ খাদিজা(রাঃ)কে তালাক প্রাপ্তা বলেছে,নন ভার্জিন বলেছে, হায় হায় (নাউজুবিল্লাহ) =D

আজহারী বলেছেনঃ রাসুল(সঃ) নিরক্ষর ছিলেন বাট মূর্খ ছিলেন না, নিরক্ষর মানে আলিফ কোনটা বা কোনটা এটা দুনিয়ার কেউ রাসুলকে শিক্ষা দেন নি কারণ, রাসুল(সঃ)এর শিক্ষক সয়ং আল্লাহ তায়ালা। অক্ষর জ্ঞান ছাড়াও যে তিনি দুনিয়ার সব চেয়ে বড় শিক্ষক এটাও উনার একটা মু’জিজা।

মাজারীরা বলেছেঃরাসুল(সঃ) নিরক্ষর বলেছে তার মানে মুর্খ বলেছে মিজাইন্না! হায় হায় (নাউজুবিল্লাহ) =D

মুর্খ_দল😄😄😄😄

আজহারীবারবারজন্মনেয়নাযিনিজীবন্তএক_কিংবদন্তী,,,

I 💟 U মুহতারাম #মিজানুররহমানআজহারী

কাট_শাট ভিডিও দিয়ে চালাকী করে লাভ নাই।কেন উদাহরনগুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো বুঝেন।দ্বীনের জন্য হক কথা বললে বাঁধা আসবেই।এটাই ইসলামের বৈশিষ্ট্য।

Design a site like this with WordPress.com
Get started